প্রেসিডেন্ট ভিক্টর চসেঙ্কুর (Viktor Yanukovych) পতন ইউক্রেনের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ২০১৩ সালে ইউক্রেন সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে একটি অ্যাসোসিয়েশন এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে ইউক্রেনের জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হওয়ার কথা ছিল। তবে চসেঙ্কু সিদ্ধান্ত নেন যে ইউক্রেনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ রাশিয়ার সাথে যুক্ত রাখা উচিত। এই সিদ্ধান্তের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, যা “ইউরোমাইদান” নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।
বিক্ষোভকারীরা চসেঙ্কুর পদত্যাগ দাবি করে এবং ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেখতে চায়। চসেঙ্কুর সরকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংস দমন-পীড়ন চালায়, যার ফলে আরও বড় ধরনের প্রতিবাদ এবং সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। সহিংসতায় শতাধিক মানুষ নিহত হয় এবং পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে চসেঙ্কু ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন।
চসেঙ্কুর পতনের পর ইউক্রেনের পার্লামেন্ট তাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণ করে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করে। এই ঘটনা রাশিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে উত্তেজনার সূচনা করে, যার প্রেক্ষিতে ক্রিমিয়ার রাশিয়ান দখল এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উত্থান দেখা দেয়।