মিখাইল গর্বাচেভ, সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ সাধারণ সম্পাদক, তার নীতি এবং দৃষ্টিভঙ্গির কারণে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার সরকারের সময়ে কিছু মূল কারণ ছিল:
- পেরেস্ত্রোইকা ও গ্লাসনস্ত: গর্বাচেভ “পেরেস্ত্রোইকা” (পুনর্গঠন) এবং “গ্লাসনস্ত” (স্বচ্ছতা) নীতির মাধ্যমে সোভিয়েত অর্থনীতির সংস্কার এবং রাজনৈতিক স্বচ্ছতার প্রচেষ্টা চালান। এই নীতিগুলি সোভিয়েত ইউনিয়নের অভ্যন্তরে সংস্কার এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি সাধনে সহায়ক হয়।
- নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি: গর্বাচেভ পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যেমন INF চুক্তি (Intermediate-Range Nuclear Forces Treaty)। এই চুক্তি সোভিয়েত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধির মাধ্যমে সম্পর্ক উন্নয়ন করে।
- শীতল যুদ্ধের অবসান: গর্বাচেভের নীতির ফলে শীতল যুদ্ধের উত্তেজনা কমে যায়, যা পশ্চিমা দেশের কাছে একটি ঐতিহাসিক সুযোগ হিসেবে দেখা হয়। তিনি “নতুন রাজনৈতিক চিন্তা” প্রবর্তন করে শীতল যুদ্ধের পরিবেশকে পরিবর্তন করেন।
- অর্থনৈতিক সম্পর্ক: গর্বাচেভ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেন, যা বাণিজ্য এবং বিনিয়োগে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে।
ভবিষ্যতে সম্পর্ক টিকে থাকার সম্ভাবনা
গর্বাচেভের সময় গঠিত সম্পর্কগুলি তখনকার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে ছিল, তবে বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে।
- ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন: ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের পর পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের মধ্যে ক্রমবর্ধমান টানাপোড়েন দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি গর্বাচেভের সময় গঠিত সম্পর্কগুলির স্থায়িত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে।
- অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কার: যদি রাশিয়া ভবিষ্যতে আরো গণতান্ত্রিক এবং বাজারভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারে, তবে এটি পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
- সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংযোগ: পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংযোগ বজায় থাকলে, তা সম্পর্কের উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
যদিও গর্বাচেভের সময়ে তৈরি সম্পর্কগুলি বর্তমান চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, তবে পরিস্থিতির ভিত্তিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ রয়েছে।